আজকে আমরা চর্যাপদের ৬টি বিখ্যাত প্রবাদ বাক্য অর্থ সহ আলোচনা করব।
বিসিএস, ব্যাংক, সরকারি বেসরকারি চাকরির বিভিন্ন পরীক্ষায় চর্যাপদের এই ছয়টি প্রবাদ বাক্য থেকে প্রশ্ন আসে।
৬টি প্রবাদ বাক্য আমরা অর্থসহ আলোচনা করব এবং কোন প্রবাদ বাক্য কোন কবি রচনা করেছেন তাও আমরা আলোচনা করব।
নিচে চর্যাপদের ৬টি প্রবাদ বাক্য, তাদের পদের নাম ও কবির নাম এবং সেই প্রবাদ বাক্য অর্থসহ আলোচনা করা হলো।
চর্যাপদের ৬টি প্রবাদ বাক্য অর্থসহ:
১ নং প্রবাদ বাক্য:
”আপনা মাংসেঁ হরিণা বৈরি”
(চর্যাপদের ৬ নম্বর পদ থেকে নেওয়া এবং এটি রচনা করেছেন ভুসুকুপা)
এর অর্থ হলো: হরিণের মাংসই তার জন্য শত্রু। কারণ বাঘ হরিণ শিকার করে কেবল হরিণের মাংস খাওয়ার জন্য। আবার মানুষও হরিণ শিকার করে হরিণের সুস্বাদু মাংসের জন্য।
২নং প্রবাদ বাক্য:
”হাথে রে কাঙ্কন মা লোউ দাপন”
(৩২নং পদ থেকে এসেছে। এটি রচনা করেছেন সরহপা)
এর অর্থ: হাতের কাঁকন দেখার জন্য দর্পণ প্রয়োজন হয়না।
৩নং প্রবাদ বাক্য:
”হারিত ভাত নাহি নীতি আবেশী”
(৩৩ নম্বর পদ থেকে নেওয়া। কবি ঢেণ্ডণপা রচনা করেছেন)
এর অর্থ হলো: হাঁড়িতে ভাত নেই অথচ প্রতিদিন প্রেমিকরা এসে ভীড় করে।
৪নং প্রবাদ বাক্য:
”দুহিল দুধু কী বেন্টে ষামায়”
(এটি চর্যাপদের ৩৩ নং পদ থেকে এসেছে এবং এটি ঢেণ্ডণপা রচনা করেন)
অর্থ হলো: দোহন করা দুধ কি বাটে প্রবেশ করানো যায়? গোপন কথা বা খবর একবার প্রকাশ হলে সেটাকে চাইলেও আর ধামাচাপা দেওয়া যায়না।
৫নং প্রবাদ বাক্য:
”বর সুণ গোহালী কিমো দুটঠ বলন্দেঁ”
(৩৯ নং পদ থেকে আগত আর এটি রচনা করেছেন সরহপা)
এর অর্থ হলো: দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। মন্দ বন্ধু বা সঙ্গীর চাইতে একা থাকা শ্রেয় মনে করা হয়েছে।
৬ নম্বর প্রবাদ বাক্য:
”অণ চাহন্তে আণ বিণ্ঠা”
(এটি চর্যাপদের ৪৪নং পদ থেকে পাওয়া এবং রচনা করে কবি কঙ্কণপা)
এর অর্থ: অন্য চাহিতে অন্য বিনষ্ট।
কিছু প্রশ্ন-উত্তর:
চর্যাপদের মধ্যে মোট ৬টি প্রবাদ বাক্য রয়েছে। এগুলো আমারা বর্তমানে ব্যবহার করি। সেই প্রবাদগুলো বর্তমানেও বেশ জনপ্রিয় বাংলা প্রবাদ।
হরিণের মাংস হরিণের নিজের জন্য শত্রু। কারণ সবাই হরিণকে হত্যা করে হরিণের মাংসের জন্য। এটি ছিলো চর্যাপদের বিখ্যাত একটি প্রবাদ বাক্য।
উপরের প্রবাদ বাক্যের অর্থ হলো: হাড়িতে ভাত নেই কিন্তু প্রেমিকেরা এসে ভীড় জমাচ্ছে। এর মাধ্যমে সমাজের অভাবের চিত্র ফুটে উঠেছে। সেই অভাবের মধ্যে আবার প্রেমের চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে।