চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেন (তাঁর নাম জেনে নিন)

বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের অন্যতম প্রধান একটি নিদর্শন হলো চর্যাপদ। তাই আমাদের জানা উচিত চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেন এবং কীভাবে চর্যাপদ আবিষ্কার হয়।

চর্যাপদ কে আবিষ্কার করেন?

চর্যাপদ আবিষ্কার করেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।

তিনি ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবারের গন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।

তবে চর্যাপদ আবিষ্কারের পথ এত সহজ ছিল না।

১৮৮২ সালে বিবিধার্থ পত্রিকার সম্পাদক রাজেন্দ্রলাল মিত্র তার একটি বইতে (বৌদ্ধ সংস্কৃতিক লিটারেচার) নেপালের সংস্কৃত ভাষায় রচিত বিভিন্ন বৌদ্ধতান্ত্রিক সাহিত্যের কথা প্রকাশ করেন।

রাজেন্দ্রলালের মৃত্যুর পর তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার বাংলা বিহার ও আসাম অঞ্চলের পুঁথি সংগ্রহের প্রতি মনোযোগ দেন।

তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগীয় প্রধান মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপর সেই দায়িত্ব অর্পন করা হয়।

আসলে তিনিই প্রথম এই চর্যাপদ আবিষ্কার করেন। তিনি এক, দুই করে তিন বার চেষ্টা করেন এটি আবিষ্কার করার।

সর্বশেষে তৃতীয় বার এটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থগারে নতুন কিছু পুঁথির সন্ধান পান।

এগুলো হলো চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয় বা চর্যাপদ, ডাকার্ণব, সরহপাদের দোহা ও কৃষ্ণপাদের দোহা নামক রচিত লেখা।

এরমধ্যে চর্যাপদ বাংলা ভাষায় এবং বাকিই তিনটি অপভ্রাংশ ভাষায় রচিত ছিলো।

১৯১৫ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে সেই পুঁথির তালিকা প্রকাশ করেন।

পরবর্তীতে এটি তার সম্পাদনায় ১৯১৬ সালে কলকাতায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ”হাজার বছরের পুরাণ বাঙালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা” নামে প্রকাশিত হয়।

তাহলে আমরা বুঝতে পারি, চর্যাপদের আবিষ্কারক হলেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।

তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তকালীন বিভাগীয় প্রধান।

অর্থাৎ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।

আর মহামোহপাধ্যায় নিজে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন। এটিই আমাদের জ্ঞতব্য বিষয়।

চর্যাপদ আবিষ্কারকের বিষয়ে কিছু প্রশ্ন-উত্তর:

কে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন ?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মহামহোপাধ্যায় চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।

কত সালে চর্যাপদ আবিষ্কার করা হয়?

১৯০৭ সালে চর্যাপদ আবিষ্কার হয়।

কত বার চেষ্টা করে চর্যাপদ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়?

মোট ৩ বার চেষ্টা করা হয়। আর তৃতীয় বারের চেষ্টায় চর্যাপদ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ ১৮৯৭ সালে ১ম বার, ১৮৯৮ সালে ২য় বার এবং ১৯০৭ সালে ৩য় বার চেষ্টা করা হয়।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাপদ আবিষ্কার করে সেটাকে কি নামে প্রকাশ করেছিলেন?

”হাজার বছরের পুরাণ বাঙালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা” নামে হরপ্রশাদ শাস্ত্রী চর্যাপদ প্রকাশ করেছিলেন।

চর্যাপদ আবিষ্কার করতে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীকে কোথায় যেতে হয়েছিলো ?

চর্যাপদ আবিষ্কার করতে হরপ্রসাদ শাস্ত্রীকে তিব্বত, নেপাল যেতে হয়েছিলো।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কে ছিলেন?

চর্যাপদের আবিষ্কারক ছিলেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগীয় প্রধান।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কোথায় গিয়ে চর্যাপদ আবিষ্কার করে নিয়ে আসেন?

তিনি নেপাল যান এবং নেপালে রাজদরবারের রাজ গ্রন্থগার থেকে অন্যান্য পুঁথির সাথে চর্যাপদ পান এবং সেটা আবিষ্কার করে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন।

Leave a Comment