কোন ফলের উপকারিতা কি বিস্তারিত জেনে নিন

ফল আমরা প্রতিনিয়তই থেয়ে থাকি। কিন্তু কোন ফলের উপকারিতা কি তা না জানা থাকলে আমাদের দেহের প্রয়োজন অনুযায়ী ফল খেতে পারি না।

যেমন কারো যদি হজমে সমস্যা হয় তাহলে তাকে পেঁপে খেতে হবে।

আবার কারো শরিলে যদি পটাশিয়ামের পরিমান বেড়ে যায় তাহলে তার কখনোই পেয়ারা, খেজুর, কলা খাওয়া উচিৎ নয় কারন এতে তার কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আবার কারো যদি ডায়াবেটিক্স থাকে থাহলে তাকে অবশ্যই মিষ্টি জাতীয় বা শর্করা জতীয় ফল এড়িয়ে চলতে হবে।

তাই কোন ফলের উপকারিতা কি তা জেনে রাখা আমাদের সবার জন্য অতি জরুরি।

তাই চলুন একে একে জেনে নেয়া যাক ফলের উপকারিতা, পুষ্টিমান, রোগ প্রতিরোধ এবং রোগ প্রতিকার ক্ষমতাঃ

আমের উপকারিতা :

কাঁচা আমে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “সি” রয়েছে। এছাড়াও কাঁচা আমে খনিজ উপাদান ও পানি থাকে।

পাকা আমে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “এ” রয়েছে।

এছাড়া আম দাঁতের জন্য এবং জ্বর, সর্দি, কাশির জন্য বেশ উপকারি।

কাঁঠালের উপকারিতা:

কাঁঠালে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “এ” রয়েছে! তাছাড়া কাঁঠাল খাদ্য হজমে এবং আমাদের চোখের জন্য বেশ উপকার করে।

কাঁঠালে প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারি একটি ফল। কাঁঠালের বীজও অনেক উপকারি।

লিচুর উপকারিতা:

লিচুতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “সি” রয়েছে। লিচু খেলে পনির অভাবও পূরণ হয়।

লিচু খেলে রুচি বাড়ে! ঠান্ডা লাগা, জ্বর, সর্দি, কাশি, টিউমার এবং পেট ব্যাথার জন্য লিচু বেশ উপকারি একটি ফল।

আনারসের উপকারিতা :

আনারসে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “সি” রয়েছে।

কিডনি ভালো রাখতে, গলা ব্যথা হলে, ব্রংকাইটিস, মূত্রবৃদ্ধিতে আনারস বেশ উপকারি।

তবে কখনোই গর্ভবতী মহিলাদের এবং দুধের সাথে আনারস খওয়া যাবে না।

তরমুজের উপকারিতা:

তরমুজকে গরমের দিনের বন্ধু বলা হয়। তরমুজ পানির পিপাষা দূর করে। মূত্র বৃদ্ধি করে।

জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কিডনি, পেটের ক্ষত এবং রক্তস্বল্পতায় উপকার করে।

জামের উপকারিতা :

জামে প্রচুর খনিজ উপাদান থাকে। এছাড়া জাম খেলে আমাশয়, অরুচি, বমি ইত্যদিতে বেশ উপকার হয়।

পেয়ারার উপকারিতা:

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন “সি” রয়েছে।

তাই পেয়ারা খেলে দাঁত, হাড়, চর্মরোগের বিশেষ উপকার হয়।

পেটের চর্বি কমাতে, ক্ষত শুকাতে, খাদ্য হজতে, খাবারে অরুচি দূর করতে পেয়ারা বেশ উপকারি।

বেলের উপকারিতা :

বেলের সরবত আমাদের পিপাষা দূর করার পাশাপাশি অনেক ঔষধি উপকার করে থাকে।

যেমন পেট পরিষ্কার রাখতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, আমাশয় দূর করতে, বল বৃদ্ধি করতে বেল বিশেষভাবে উপকারি।

জাম্বুরার উপকারিতা :

জাম্বুরা খেতে সবাই পছন্দ করে। জাম্বুরা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মুখরোচক একটি ফল।

জাম্বুরা কোষ্ঠকাঠিন্য, জ্বর, সর্দিতে বিশেষ উপকারি।

লেবুর উপকারিতা :

লেবু ভিটামিন সি এর প্রধান উৎস। লেবুতে ভিটামিন সি থাকায় লেবু খেলে ত্বক ভালো থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া লেবু ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি, কাশি দূর করে।

পেঁপের উপকারিতা :

পেঁপেতে পেপাইন নামক উপদান আমাদের খাদ্য হজমে সাহয্য করে।

এছাড়া পেঁপে পেট ফাঁপা, রক্ত জমাট বাধা এবং ক্ষত সারাতে সহায়ক। পেঁপে খেলে শরীল ও পেট ঠান্ডা থাকে।

ডালিম বা আনার ফলের উপকারিতা কি:

ডলিমকে বলা হয় স্বর্গীয় ফল। ডালিম স্বাদে মানে গুনে সব দিকেই সেরা একটি ফল।

ডালিমের সেলুলজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে! এছাড়া ডলিম পেটের অসুখ এবং রক্ত ক্ষরন বন্ধ করতে সাহায্য করে।

করমচার উপকারিতা :

করমচা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল। করমচা খেলে রুচি বাড়ে, ত্বক ও রক্ত নালী শক্ত হয়।

এটি রক্ত ক্ষরণ বন্ধ করে, কৃমি নাশক হিসেবে কাজ করে।

তেঁতুলের উপকারিতা:

তেঁতুল মুখরোচক ফল। তেঁতুল খেতে সবাই পছন্দ করে।

তেঁতুল হৃদরোগ বা স্টোক, পেটফাঁপা; মাথাব্যথা ও বিষাক্ততা নিরাময় করে।

এছাড়াও তেঁতুর খেলে শরিলের বল বৃদ্ধি পায়।

জামরুলের উপকারিতা :

জামরুল খেলে ত্বক এবং ডায়াবেটিক্সের উপকার হয়।

লটকনের উপকারিতা :

লটকনে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে। এছাড়া লটকন খেলে রুচি বাড়ে ও বমি বমি ভাব দূর হয়।

আমলকির উপকারিতা :

আমলকি সকলের পরিচিত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল।

আমলকি ক্ষত সারায়, ত্বক ও চুল ভালো রাখে, রুচি বাড়ায় ।

এছাড়া আমলকি যকৃৎ, পেটের পিড়া, কাশি, হাঁপানি, ডায়াবেটিক্স, অর্জীণ এবং জ্বর নিরাময় করে।

কুলের উপকারিতা :

বাতের ব্যথা, রক্ত পরিষ্কার, বদহজম, পেট ফাঁপা এবং অরুচিতে উপকার করে।

আমড়ার উপকারিতা :

আমড়া খেলে কন্ঠস্বর পরিষ্কার হয়, কফ ও পিত্ত নিবারণ হয় ।

কলার উপকারিতা :

কলা ক্ষুধা দূর করে। আমাশয়, ডায়রিয়া, আলসার, কোষ্ঠকাঠিন্য আরোগ্য করে।

ডাবের উপকারিতা :

ডাবের পানি খনিজের অভাব পূরণ করে। শারীরিক দূর্বলতা দূর করে। ডাবের পানি স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।

কামরাঙ্গার উপকারিতা :

কামরাঙ্গায় ভিটামিন সি রয়েছে। কামরাঙ্গা রক্তক্ষরণ বন্ধ, বমি বন্ধ, কৃমি নাশক, সর্দি কাশি এবং এ্যাজমাতে উপকারি।

সফেদার উপকারিতা :

সফেদা খেলে জ্বর ভালো হয়, ত্বক এবং রক্তনালী দৃঢ় হয়। এটি রক্ত ক্ষরণ বন্ধ হয়।

ডেউয়ার উপকারিতা :

ডেউয়া পিত্ত বিকারে এবং যকৃতের পীড়ায় বিশেষ উপকার করে।

খুদিজামের উপকারিতা :

খুদি জাম ডায়বেটিক্স, আমাশয়, অরুচিতে উপকার করে।

আতা ফলের উপকারিতা কি :

আতা শক্তি বৃদ্ধি এবং বলকারক একটি ফল। আতা বাত ও পিত্ত নাশক, রক্তবৃদ্ধিকারক, মাংসবৃদ্ধি কারক উপকারি ফল।

চালতার উপকারিতা :

চালতা ফল পেট ফাঁপা, কফ, বাত এবং পিত্ত নাশক হিসেবে কাজ করে।

সাতকরা ফলের উপকারিতা কি:

সাতকরা রুচিবর্ধক, হজম বৃদ্ধিকারক এবং বমি নিবারক ফল।

ডুমুর ফলের উপকারিতা কি:

ডুমুুর ডায়াবেটিক্স, টিউমার, কিডনি এবং লিভারের পাথর নিরাময় করতে বিশেষ ভাবে কাজে লাগে।

কদবেলের উপকার :

কদবেল যকৃৎ ও হৃদপিন্ডের বল বৃদ্ধিকারক একটি ফল। এটি পিত্ত রোগ এবং পেটের অসুখও নিরাময় করে।

তালের উপকারিতা :

তাল শ্লেষানাশক, মূত্র বৃদ্ধি করে, ব্যথা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করে।

জলপাইয়ের উপকারিতা:

জলপাই মুখের রুচি বাড়ায়। শরিলের ত্বক মসৃণ ও কোমল রাখে। জলপাইরের তেল বা অলিভ অয়েল বিশেষ উপকারি।

খেজুরের উপকারিতা:

শক্তিদায়ক খাবারের মধ্যে খেজুর অন্যতম। খেজুর পিপাষা মেটায়। শারিরীক দূর্বলতা দূর করে।

কমলার উপকারিতা :

কমলাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি রয়েছে। কমলা খেলে সর্দিজ্বর, ক্ষত এবং চর্মরোগ ভালো হয়।

কোন ফলের উপকারিতা কি, দেশি ফল বিদেশি ফল, ফলের পুষ্টি উপাদান সহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে আমাদের সাইটে চোখ রাখান।

আরো কোন ফলের উপকারিতা কি তা জানার থাকলে কমেন্টে আপনার মূল্যবান মতামত জানাতে ভুলবেন না।

FAQ:

কোন ফলে জল রয়েছে বেশি?

ডাব, আনারস, কমলা, তরমুজ, বাঙ্গি ইত্যাদি।

বাংলাদেশের জাতীয় ফল কোনটি?

কাঁঠাল।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফল কোনটি?

কাঁঠাল।

অবহেলিত দেশি ফল কোনগুলো?

বেত ফল, গাব, ডেউয়া, করমচা, শরিফা, সফেদা ইত্যাদি।

ফলের ইংরেজি কি?

ফ্রূট বা Fruits

কাঁঠালের ইংরেজি কি?

Jackfruit

কোন কোন ফলের সরবত হয়?

ডালিম, আনারস, তরমুজ, পেঁপে, আম, লেবু।

কোন ফলের সস বানানো যায়?

টমেটো, তেঁতুল, আপেল ইত্যাদি।

শীতকালীন ফল কোনগুলো?

বরই, জলপাই, কমলা, স্ট্রবেরী।

বর্ষার সময় কোন ফল বেশি পাওয়া যায়?

পেয়ারা, আমড়া ইত্যাদি।

কোন ফল থেকে তেল হয়?

জলপাই।

টক ফল কোনগুলো?

আমলকি, তেঁতুল, আম, জলপাই, বরই, কামরাঙ্গা ইত্যাদি।

কোন ফল রান্না করে খাওয়া যায়?

পেঁপে, টমেটো, কলা।

Leave a Comment