মিশরীয় সভ্যতা গঠনে নীলনদ অথবা ভৌগোলিক গুরুত্ব কি

প্রিয় পাঠ, বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাস আলোচনার আজকে পোষ্টে আমরা- মিশরীয় সভ্যতা গঠনে নীলনদ বা ভৌগোলিক গুরুত্ব কি? তা বিস্তারিত আলোচনা করবো।

পৃথিবীর প্রতিটি সভ্যতা গড়ে ওঠার পেছনে কোন না কোন উপাদানের বিশেষভাবে অবদান রয়েছে এবং সে উপাদানটি সভ্যতাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছে।

তেমনি নীলনদ অন্যতম উল্লেখযোগ্য উপাদান যা মিশরীয় সভ্যতা কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছে। মূলত মিশরের সভ্যতা গড়ে উঠেছে নীলনদ কে কেন্দ্র করেই।

আরো পড়ুন- মিশর সভ্যতার ইতিহাস বিস্তারিত..

মিশরীয় সভ্যতা গঠনে নীলনদ এর ভূমিকা:

প্রতিটি সভ্যতা গড়ে উঠার পেছনেই কোনো না কোনো ভৌগোলিক উপাদান বিশেষ ভাবে দায়ী! তেমনি- প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা গঠনে অন্যতম ভৌগোলিক উপাদান হলো নীলনদ।

আবার অপরদিকে মিশর সভ্যতার প্রাণ হলো নীলনদ। এজন্য ইতিহাসবীদগণ মিশরকে নীল নদের দান বলে উল্লেখ করেন।

নীল নদের উৎপত্তি হয়েছে দক্ষিনে সূদূর আবিসিনিয়ার পাহাড়ে! দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে ৪ হাজার মাইল অতিক্রম করে এসে নীলনদ মিলিত হয়েছে ভূমধ্যসাগরে। চলার পথে সৃষ্টি করেছে ৬টি জলপ্রপাতের।

আফ্রিকার মধ্যে অঞ্চলে গ্রীষ্মকালের শুরুতে অর্থাৎ জুন মাস থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এই বৃষ্টিপাতের ফলে অঢেল জল নীল নদে নেমে আসে।

ফলে নীল নদের জল সগসাই বাড়তে থাকে। এই কারণে নীল নদের জল দ্রুত বেড়ে যায়! নীল নদের পানি যখন দু’কূল ছাপিয়ে যায়, তখন নীলনদে ভয়ানক বন্যা দেখা দেয়।

এভাবে প্রতি বছর জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নীল নদের জল বেরিয়ে বন্যা সৃষ্টি হয় এবং গোটা অক্টোবর পর্যন্ত এই বন্যা অবস্থা চলে।

ঐতিহাসিকদের মতে- নীলনদের এ বার্সিক বন্যা বা পাবনের ওপরই মিশরের অস্তিত্ব ও সমৃদ্ধি নির্ভর করে। কারণ বন্যা শেষে নভেম্বর মাসে পলি পড়তে শুরু করে।

পলিমাটির এই নতুন স্তর পরায় মাটিতে প্রাচীন মিশরীয়রা অধিক ফসল ফলাতো। এভাবে নীলনদের কারণে প্রচুর ফসল উৎপন্ন হতো! যা ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রগতিতে ভূমিকা রেখেছে।

জাতীয় সমন্বযয়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা ছাড়াও তারা নীলনদকে আরাধ্য দেবতা হিসেবে গণ্য করতো।

এ কারণেই ইতিহাসের জনক হেরোডোটাস লিখেছেন যে ব্যাক্তি মিশর দেখেছেন সে অবশ্যই উপলব্ধি করেছে যে এটি একটি সোপার্জিত দেশ, নীলনদের দান।

উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, মিশরীয় সভ্যতা গঠনে নীলনদ একমাত্র নিয়ামক! নীলনদকে ছাড়া মিশরীয় সভ্যতার অস্তিত্ব কল্পনা করার অবকাশ নেই।

কিছু প্রশ্ন-উত্তর:

নীলনদের দৈর্ঘ্য কত মাইল ?

প্রায় চার হাজার মাইল (৪১৩০ মাইল) দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট্য নীল নদ বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ নদী।

নীলনদের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার ?

নীলনদের দৈর্ঘ্য ৬৬৫০ কিলোমিটার হিসাব করা হয়েছে। এটি হিসাব করা হয় নীলনদের উৎপত্তিস্থল থেকে ভূমধ্য-সাগর পর্যন্ত।

কোন দেশের সাথে নীলনদের নাম জড়িয়ে রয়েছে?

মিশর বা ইজিপ্টের সাথে নীলনদের নাম বিশেষ ভাবে সম্পর্কিত।

মিশর কোন মহাদেশে অবস্থিত ?

বিখ্যাত দেশ মিশর, আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত। মিশর পিরামিড, নীল নদ সহ অন্যান্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক কারনে জগৎখ্যাত।

Leave a Comment