Divisions of the Nervous System (স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস) ৭ম পর্ব

Divisions of the Nervous System স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস ৭ম পর্ব ৩য় অধ্যায়ের ৩নং ক্লাসে আমরা যে যে বিষয়ে আলোচনা করবো তা হলোঃ

  1. কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Central nervous system)
  2. প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র (Peripheral nervous system)
  3. প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস (Divisions of the Peripheral nervous system)
  4. সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস (Division of the Autonomic nervous system)
Divisions of the Nervous System স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস
চিত্র ১ঃ Nervous System স্নায়ুতন্ত্র [7rongs]

উপরের ১নং চিত্রের মাধ্যমে বোঝা যায় আমাদের জটিল স্নায়ুতন্ত্র বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত বা বিন্যাসিত।

স্নায়ুতন্ত্রের ‍দুটি প্রধান ভাগ হলো:
১.কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Central nervous system)
২.প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র (Peripheral nervous system)

Divisions of the Nervous System স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস
Divisions of the Nervous System স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Central nervous system):

মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জু (spinal cord) নিয়ে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত। এর মধ্যে মস্তিষ্কই স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

মেরুরজ্জুর (spinal cord) প্রধান কাজ হলো দেহ এবং মস্কিষ্কের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান করা। কিন্তু মেরুরজ্জুও নিজে থেকেই প্রাথমিক তথ্যে সারা দিতে পারে।

যেমন হঠাৎ কোনো গরম বস্তুর স্পর্শ পেলে নিজেকে সরিয়ে নেয়। গরম বস্তুু স্নায়ুবিক উদ্দীপনা সৃষ্টি করলে অন্তনিউরন বার্তাটি অন্য নিউরনে পাঠায় এর ফলে পেশী সংকোচন-প্রশারনের মাধ্যমে শরীলকে/অঙ্গকে সরিয়ে নেয়।

গরম বস্তুুর স্নায়ুবিক উদ্দীপনা সৃষ্টি

প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র:

যে সকল স্নায়ু মস্তিষ্ক এবং মেরুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড থেকে শাখা-প্রশাখার মতো বের হয়ে দেহের সমস্ত প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে তাদের প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র বলে।

প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র দেহ থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে বার্তা প্রেরণ করে। আবার এটি কার্য অনুযায়ী কেন্দ্রীয় স্নায়তন্ত্র থেকে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন পেশী, গ্রন্থীতেও বার্তা প্রেরণ করে।

সিন্যাপ্সের মাধ্যমে বার্তা শুধু একমুখী ভাবে প্রবাহিত হতে পারে। তাই নিউরনের যে অংশের মাধ্যমে সমস্ত দেহ থেকে বার্তা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে ফিরে আসে তাকে অ্যাফারেন্ট নিউরন বলে (Afferent neurons) আবার নিউরনের আলাদা যে অংশের বা সেটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে বার্তা দেহে ফিরে আসে তাকে ইফারেন্ট নিউরন (Efferent neurons) বলে।

প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস (Divisions of the Peripheral nervous system):

প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র আবার দুই ভাগে বিভক্ত।
১. করোটিকা-সুষুম্না স্নায়ু (Somatic nervous system) এবং
২. সংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Autonomic nervous system)

করোটিকা-সুষুম্না স্নায়ু (Somatic nervous system) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে দেহকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মস্তিষ্কে বার্তা বয়ে নিয়ে আসে।

এটি আমাদের ঐচ্ছিক কাজ এবং অনৈচ্ছিক উভয় কাজের বার্তাই পরিবহন করে।আবার করোটিকা-সুষুম্না স্নায়ু সেন্সরী রিসেপ্টর(sensory receptor) থেকে আগত বার্তাও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পরিবহন করে নিয়ে আসে।

হৃদপিন্ড, পাকস্থলি, অন্ত্র ইত্যাদিতে বার্তা প্রেরণাকারী স্নায়ু নিয়ে সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Autonomic nervous system) গঠিত।

সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্র প্রধান দুইটি কাজ করতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। তা হলোঃ

১. দেহের প্রয়োজনীয় কাজ(Essential body function): সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্র সয়ংক্রীয় ভাবেই দেহের অনেক অঙ্গের কাজ তড়ান্বিত করে। যেমনঃ হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাস, হজম, ঘেমে যাওয়া, যৌন উত্তেজনা সহ বিভিন্ন কাজ এই সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের দ্বারা পরিচালিত হয়।

2. অনুভুতি/আবেগ(Emotion): সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্র আবেগ বা ইমোশনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। যেমন কারো মাথা ব্যথা, পাতলা পায়খানা,পেট ব্যথা হলে সে খুবই চিন্তিত বা উত্তেজিত হয়ে পরে। সয়ংক্রীয় স্নায়তন্ত্রের জন্যই এমন অনুভুতি অনভূত হয়।

সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর আমাদের আসলে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই! কারণ সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্র সয়ংক্রীয় ভাবেই তার কাজ পরিচালনা করে।

সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বিন্যাস (Divisions of the Autonomic nervous system):

সিম্প্যাথেটিক(sympathetic) এবং প্যারাসিম্প্যাথেটিক(parasympathetic) এ দুই প্রকার স্নায়ু নিয়ে সয়ংক্রীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত।

এ দুই ধরনের স্নায়ুই কাজের ধরন ও পরিস্থিতি অনুয়ায়ী সতন্ত্র ভাবে নিজেদের কাজ করে থাকে।

সিম্প্যাথেটিক স্নায়ু শারিরীক বা মানসিক অবস্থায় সারা দেয়ার জন্য দেহকে সক্ষম করে তোলে। সিম্প্যাথেটিক স্নায়ু উদ্দীপনায় সারা দেয়ার জন্য আমাদের অঙ্গের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

সিম্প্যাথেটিক স্নায়ুর কাজঃ

  1. আলোতে চোখের পাতা খোলে দেয়।
  2. লালাঝরা হ্রাস করে।
  3. হৃদ স্পন্দন বাড়ায়।
  4. বক্ষপিঞ্জরকে প্রসারিত করে ফুসফুসে বায়ুচাপ বাড়ায়।
  5. হজমে পরিপাকতন্ত্রকে বাধা দেয়।
  6. যকৃৎ থেকে গ্লাইকোজেন বা সুগার নিঃসরন করে।
  7. অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে এপিনেফ্রন নিঃসরন করে
  8. মূত্রনালি সংকচন করে রাখতে বাধা দেয়। [ফলে মূত্রত্যাগ ঘটে]
  9. বৃহৎ পেশির চাপ এবং রক্ত প্রবাহ বাড়ায়।

প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম সিম্প্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের অনুরুপ তবে বিপরীত ধরনের। প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ু উদ্দীপনায় সারা দেয়ার জন্য আমাদের অঙ্গের সক্ষমতা কিছুটা হ্রাস করে।

প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ুর কাজঃ

  1. চোখের পাতা বন্ধ করে দেয়।
  2. লালাঝরা বৃদ্ধি করে হজমে সাহায্য করে।
  3. হৃদ স্পন্দন কমায়
  4. বক্ষপিঞ্জরকে সংকুচিত করে ফুসফুসে বায়ুচাপ কমায়
  5. হজমে পরিপাকতন্ত্রকে সক্রিয় করে।
  6. যকৃৎ থেকে পিত্তরস নিঃসরন করে চর্বি হজমে সাহায্য করে
  7. অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে এপিনেফ্রন নিঃসরনে বাধা দেয়।
  8. মূত্রনালি সংকচন করে রাখে। ফলে মূত্রত্যাগ ঘটে না
  9. বৃহৎ পেশির চাপ এবং রক্ত প্রবাহ কমায়।

Leave a Comment