সংস্কৃতি কাকে বলে (সংস্কৃতির ৫টি সংজ্ঞা)

প্রিয় পাঠক, বিশ্ব সভ্যতার অংশ হিসেবে, আমরা জানবো- সংস্কৃতি কাকে বলে ? ও সংস্কৃতির ৫টি বিখ্যাত সংজ্ঞা।

সংস্কৃতি হলো জীবন প্রণালী। প্রকৃতপক্ষে সংস্কৃতি হলো সামাজিক সৃষ্টি। মানুষ তার অস্তিত্বের নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে যা সৃষ্টি করেছে তাই হল সংস্কৃতি।

সংস্কৃতি কাকে বলে ও সংস্কৃতির কয়েকটি বিখ্যাত সংজ্ঞাঃ

শাব্দিক অর্থে সংস্কৃতি সংস্কৃতির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো কালচার বাংলাতে সংস্কৃতি শব্দটিকে কৃষ্টি বলা হয়ে থাকে।

সংস্কৃতি হলো মানুষের জীবন পদ্ধতি। ক্ষুদ্রতম অর্থে সংস্কৃতি বলতে বোঝায় মার্জিত রুচি বা অভ্যেস জনিত উৎকর্ষতা।

ষোল শতকের শেষের দিকে ফ্রান্সিস বেকন সর্বপ্রথম ইংরেজি সাহিত্যে কালচার শব্দটি ব্যবহার করেন! ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ওয়ার্ল্ড ইমাসন কালচার শব্দটিকে পূর্ণভাবে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন।

সংস্কৃতির ৫টি সংজ্ঞা:

বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে সংস্কৃতির সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাদের কয়েকজনের সংজ্ঞা দেওয়া হলঃ

(১) প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী জন্স এর মতে সংস্কৃতির সংজ্ঞা – Culture is the sum of man’s creation.

(২) Malinowski বলেছেন যে- মানুষের সমস্ত কর্মই সংস্কৃতি যার মাধ্যমে সে তার উদ্দেশ্য অর্জন করে।

(৩) মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গীতে সংস্কৃতি হলো- সুপার স্ট্রাকচার যেটা Basic স্ট্রাকচার এর উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।

(৪) সমাজবিজ্ঞানী টেলর তার প্রিমিটিভ কালচার বইতে সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। তার মতে সংস্কৃতি হলো সমাজের সদস্য হিসেবে অর্জিত আচার-আচরণ, ব্যবহার, জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্পকলা, নীতি, প্রথা, আইন, ইত্যাদির সমাবেশই হলো সংস্কৃতি।

(৫) উপরের সংজ্ঞাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, মানুষের সৃষ্টির সবকিছুর সমষ্টি হচ্ছে সংস্কৃতি। অর্থাৎ মানব সমাজে বসবাস করতে গিয়ে যে চিন্তা-চেতনার, শিল্পকলা, আচার-আচরণ, উৎপাদন কৌশল, আইন-আদালত, নীতিকথা ইত্যাদি অর্জন বা সৃষ্টি করে তার সমগ্র সমষ্টিই হলো সংস্কৃতি।

এখন আমরা সবাই সংস্কৃতি কি ও কাকে বলে তা সহজেই বলতে পারবো।

সংস্কৃতির পরিবর্তন বা রুপান্তর:

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সংস্কৃতির পরিবর্তন কোথাও খুব দ্রুত আবার কোথাও খুব মন্থর গতিতে ঘটে থাকে। তবে সার্বিকভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে সংস্কৃতির রূপান্তর এর গতি খুব ধীর।

বিজ্ঞান ও শিক্ষার উন্নতির বর্তমান যুগে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে প্রাচীন কালের মানুষের সংস্কৃতি যেমন ভাগ্য গণনা, জ্যোতিষ শাস্ত্র, সংখ্যাতত্ত্ব, প্রভৃতি এখনো অনেক ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে।

শিক্ষিত ও আধুনিক সমাজের অনেকেই এখনও ১৩ সংখ্যাকে দুর্ভাগ্যর প্রতীক হিসেবে মনে করেন। ভাগ্যর উপর বিশ্বাস এখনো বেশ জোরালো।

দেখা যায় যে আজকের দিনে মেয়েরা রাজনীতি, শিল্প ও সাহিত্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পরও আধুনিক সভ্যতায় তাদের পুরুষের চেয়ে কম বুদ্ধিমত্তার অধিকারী বলে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়।

সংস্কৃতির রুপান্তর ঘটে খুব ধীর গতিতে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্নভাবে।

Leave a Comment