প্রাচীন মিশরীয় স্থাপত্য শিল্প সম্পর্কে আলোচনা

মিশরীয় সভ্যতা শিল্প, বিজ্ঞান, শিক্ষা, লিখন, ধর্ম, সহ সকল ক্ষেত্রে সমসাময়িক অন্যান্য সকল সভ্যতার থেকে অগ্রগামী ছিলো, এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। অনরুপ ভাবে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার স্থাপত্য শিল্প ও বিভিন্ন স্থাপনা গৌরবের দাবিদার এবং যা এখনো যুগ যুগ ধরে টিকে রয়েছে।

প্রাচীন মিশরের হৃদয় শিল্পমনা ছিল। যার প্রমাণ তারা তাদের সুনিপুণ দক্ষতার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে রেখে গেছে।

প্রাচীন মিশরীয় স্থাপত্য শিল্প মননকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়।
এক নাম্বার- স্থাপত্য এবং দুই নাম্বার- চিত্রকলা।

(১) প্রাচীন মিশরীয় স্থাপত্য শিল্প কলার বিবরণ:

স্থাপত্যশিল্পে মিশরীয়রা অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিল। প্রাচীন মিশরের পিরামিড ও মন্দিরসমূহ স্থাপত্যবিদ্যায় মিশরীয়দের সর্বশ্রেষ্ঠ ও চরম উৎকর্ষের নিদর্শন এখনো বহন করছে। সে সময় মিশরের ভাস্কর্য ও চিত্র শিল্পের বেশ বিকাশ ঘটেছিল।

স্থাপত্যকলার মধ্যে পিরামিড প্রাচীনকালের অন্যতম আশ্চর্য একটা কীর্তি! পিরামিডের অভ্যন্তরের মিশরের সম্রাট, রাজা, ফারাও বা ফেরাউনের মমি করে করে রাখা হতো। এজন্য পিরমিডের ভেতরে প্রবেশ করা খুব কঠিন ব্যাপার ছিল।

সম্ভবত পিরামিড ছিল দেশ ও জাতির চিরস্থায়িত্বের প্রতীক! মিশরে প্রায় ৭০টি পিরামিড এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পিরামিডের নাম ছিল খুফু বা কিওপকাপ পিরামিড।

এই পিরামিডের উচ্চতা ছিল প্রায় ৪৮০ ফুট এর মতো। সেই সময়ের তুলনায় যা ছিলো বিশাল স্থাপনা।

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় নতুন সাম্রাজ্য যুগে এসে পিরামিড এর পরিবর্তে সুবিশাল মন্দিরসমূহ মূল স্থাপত্যকীর্তি রূপে স্থান দখল করে নেয়।

কর্ণাকের মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এখনো নতুন সাম্রাজ্য যুগের শিল্প রীতি কৌশলের পরিচয় ধরে রেখেছে।

(২) প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার চিত্রকলার বিবরণ:

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার ভাস্কর্য ও চিত্রাঙ্কন শিল্প প্রধানত স্থাপত্য শিল্পের অংশ হিসেবে উদিত হয়! পিরামিড ও মন্দিরের অভ্যন্তরে স্থাপনের জন্য এবং মন্দিরের গায়ে অলংকরণের জন্য প্রয়োজনীয়তা থেকেই বিভিন্ন শিল্প রীতি প্রবর্তন হয়।

এছাড়া মিশরীয় ভাস্কর্যের সুপরিচিত দৃষ্টান্ত হলো সম্রাটদের মূর্তি তৈরি। নতুন সাম্রাজ্যের সময়ে যেসব মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছিল তাদের উচ্চতা ছিল ৭৫ থেকে ৯০ ফুট পর্যন্ত উঁচু।

মিশরীয় চিত্রশিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হল ইখনাটনের আমলের ও ঠিক পরের চিত্রসমূহ! সে আমলে দেয়ালে চিত্রের মাধ্যমে শিল্পীরা তাদের পরিচিত জগতকে আশ্চর্য সুন্দর করে রূপান্তরিত করতো!

জলাভূমিতে বা পুকুরে হাঁসের সাঁতার কাটার দৃশ্য, মাছ ধরার দৃশ্য, পলায়নরত হরিণ, ফুল ও ফল শোভিত গাছ সহ বিভিন্ন রঙিন ছবি মন্দিরের দেওয়ালে সুশোভিত ভাবে তারা অঙ্কন করতো।

এছাড়াও মিশরীয়দের কালো ধূসর নীল সহ বিভিন্ন রঙের ব্যবহার তাদের জানা ছিল; এবং তারা খুব ভালোভাবে রঙের ব্যবহার করার কৌশল জানতো।

তাহলেই আমরা বুঝতে পারলাম শিল্পকলার অন্যান্য দিক যেমন স্বর্ণ ও পাথরের কারুকার্যময় গহনা তারা তৈরি করত।

তারা গ্লাস ও মৃৎপাত্র ও পাথরের কাজের অগ্রগতি অর্জন করেছিল।

Leave a Comment