বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ কি ১৯০৭ সালে আবিষ্কার হয়? আবিষ্কার কিভাবে কার মাধমে ও কখন হলো এসব নিয়ে আজ আলোচনা করব।
বাংলা সাহিত্যকে মোট ৩টি যুগে ভাগ করা হয়েছে। প্রাচীন বা আদি যুগ, মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগ।
চর্যাপদ আদি বা প্রাচীন যুগের নিদর্শন। কিন্তু চর্যাপদ প্রাচীন যুগের নিদর্শন হলেও এটি বর্তমান বা আধুনিক যুগে এসে আবিষ্কৃত হয়।
চর্যাপদ কি ১৯০৭ সালে আবিষ্কৃত হয়? কখন কোথায় আবিষ্কার হয়?
চর্যাপদ যিনি আবিষ্কার করেন তার নাম হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। তিনি ১৮৯৭ সালে প্রথম বার চর্যাপদ আবিষ্কারের জন্য নেপাল যান এবং ব্যর্থ হন।
২য় বার ১৮৯৮ সালে তিনি আবারও নেপাল যান এবং চর্যাপদ আবিষ্কার করতে আবারও ব্যর্থ হন।
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে ৩য় বার নেপাল যান এবং নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করতে সক্ষম হন।
সুতরাং আমরা বলতে পারি যে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল থেকে ১৯০৭ সালে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
১৯১৫ সালে এর আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এসিয়াটিক সোসাইটি থেকে এই চর্যাপদ প্রকাশ করেন।
প্রকাশকালীন তিনি এর নাম দেন ”নেপাল থেকে প্রাপ্ত তাল পাতার পুঁথির একটি তালিকা। যার ইংরেজি নাম হলো: A Catalogue of Palm Leaf and Selected Paper MSS. Belonging to the Library, Nepal.
এরপরে চর্যাপদ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯১৬ সালে আবারও প্রকাশিত হয়।
তখন এর নাম দেওয়া হয় ”হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা”।
চর্যাপদ আবিষ্কার বিষয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:
যিনি চর্যাপদ আবিষ্কার করেন তার নাম হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগীয় প্রধান।
১৯০৭ সালে চর্যাপদ আবিষ্কার হয়। ১৯০৭ সালের আগে আরো ২ বার চর্যাপদ আবিষ্কারের চেষ্টা করে ব্যর্থতা আসে।
নেপালের রাজদরবারের রাজ গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার হয়।
হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপাধি ছিলো মহামহোপাধ্যায়।
মাত্রাবৃত্ত ছন্দে চর্যাপদ রচিত। আধুনিক ছন্দ বিচারে চর্যাপদে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ দেখা যায়। তবে চর্যার পদগুলি প্রধানত পয়ার এবং ত্রিপদী পদে রচিত। ১৬ মাত্রার পাদাকুলক ছন্দের ব্যবহারই এখানে বেশি। তবে সর্বত্র নির্দিষ্ট মাত্রারীতি দেখা যায়নি।
১৯১৫ সালে এসিয়াটিক সোসাইটি থেকে চর্যাপদ প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রকাশ করেন এর আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নিজে।