খেজুরের ৭০টি উপকারিতা কি কি জেনে নিন

আমাদের সকলের প্রিয় একটি আরবীয় ফল হলো খেজুর। আজ আমরা খেজুরের প্রায় ৭০টি উপকারিতা কি কি তা আলোচনা করব।

তো চলুন একে একে খেজুরের ৭০টি উপকারিতা গুলো কি কি জেনে নেয়া যাক।

খেজুরের উপকারিতা সমূহ:

  • খেজুরে প্রচুর পরিমানে খাদ্যশক্তি থাকায় দুর্বলতা দূর করতে আমাদের দেহকে সাহায্য করে।
  • খেজরে আমাদের স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
  • রোজায থাকলে অনেকক্ষন খালি পেটে থাকতে হয় বলে দেহের প্রচুর শক্তির দরকার হয়। খেজুর আমাদের দেহে এ শক্তির যোগান দিতে পারে।
  • খেজুরে অনেক গ্লুকোজ থাকায় শ্রমজীবি মানুষের দেহের এ ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
  • হৃদরোগী বা যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্যও খেজুর বেশ উপকারী।
  • খেজুরের প্রচুর খাদ্য উপাদান রয়েছে যা অন্যান্য খাদ্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।
  • খেজুরে খনিজ ও আয়রন থাকায় খেজুর রক্ত উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • খেজুর হজমশক্তি বৃদ্ধি, যকৃৎ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
  • খেজুর মুখের রুচি বাড়ায়, অরুচি দূর করে।
  • খেজুর ত্বক ভালো রাখে ও ত্বক উজ্জল করে তোলে।
  • পাকা খেজুরে ভিটামিন এ থাকায় খেজুর দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • খেজুর ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • খেজুর পক্ষঘাত ও সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী(পারকিনসন) রোগের জন্য বিশেষ ভাবে উপকারী!
  • খেজুর আমাদের ফুসফুস সুরক্ষা করার পাশাপাশি মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করতেও ভূমিকা রাখে।
  • অন্তঃসত্ত্বা মহিলার সন্তান জন্মের সময় খেজুর খেলে জরায়ুর মাংসপেশির দ্রুত সংকোচন-প্রসারণ ঘটে। ফলে সন্তান প্রসব হতে সাহায্য করে।
  • খেজুর খেলে মহিলাদের সন্তান প্রসবের পরের সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তক্ষরণ কমিয়ে দেয়।
  • খেজুরের মধ্যে রয়েছে ডায়েটরই ফাইবার নামক উপাদান যা কলেস্টোরল থেকে মুক্তি দেয়।
  • খেজুর ফূসফুস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার থেকে শরীরকে সুরক্ষা করে।
  • নারীদের শ্বেতপ্রদর ও শিশুর রিকেটস্ রোগ নিরাময়ে খেজুরের কার্যকারিতা প্রশংসনীয়!
  • তাজা খেজুর নরম এবং মাংসল হয় বলে তা সহজেই হজম হয় এবং আমাদের কর্মক্ষতা তৎক্ষণিক বৃদ্ধি করে দেয়।
  • আজওয়া খেজুর বিষের মহৌষধ হিসেবে পরিচিত।
  • মুখের অর্ধাঙ্গ রোগে, পক্ষঘাত ও সব ধরনের অঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য খেজুর উপকারী। খেজুরের বীজও রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • পাতলা পায়খানা বন্ধ করে।
  • খেজুরের চুর্ণ মাজন হিসেবে ব্যবহার করলে দাঁত পরিষ্কার ও ঝকঝকে হয়।
  • খেজুর পেটের গ্যাস বা এসিডিটি এবং কফ দূর করে, শুষ্ক কাশি এবং এজমায় বিশেষ উপকারী করে।

খেজুরের বিশেষ উপকারিতা সমূহঃ

  • যে সকল ছেলেরা দৈহিক সমস্যায় ভুগেছেন খেজুর তাদের সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভাবে কার্যকরী। এর জন্য প্রতি দিন ৭ টি করে টাটকা খেজুর খেতে হবে।
  • যেসকল পুরুষের বিশষ বস্তু পাতলা, তা ঘন করতে মাখনের সাথে খেজুর খেতে হবে। অথবা মাখন যোগে খেজুরের হালুয়া তৈরি করে খেতে হবে।
  • খোরমা খেজুর খেলেও সমস্যার সমাধান হয়।
  • খোরমা খেজুরের হালুয়া সম্যার মক্ষম ঔষধ হিসেবে সর্বাধিক সমাদৃত।
  • সকল ধর্মে খেজুরের গুরুত্বের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। খেজুর কে রোগ মুক্তির মৌহষধ মনে করা হয়।
  • খেজুর দুর্বলতা কাটাতে অনেক সাহায্য করে এবং সন্তান ডেলিভারীর পরে মায়েদের অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ করতে ও খেজুর সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • সন্তান প্রসব পরবর্তী সময়ে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে খেজুর কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  • ৭/৮ মাস সময় থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুর একটি উৎকৃষ্ট খাদ্য। এসময় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে অনেক দুর্বলতা কাজ করে। তখন খেজুর মায়েদের শরীরের এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
  • দেহকে সচল ও কার্যক্ষম রাখতে শক্তির প্রয়োজন। এর অভাবে দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, তাই শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মানসিক অবসাদ সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যার ক্ষেত্রে শর্করা জাতীয় খাদ্য শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। আর এ শর্করা জাতীয় খাদ্য হিসেবে খেজুর খাদ্য শক্তির উল্লেখ যোগ্য উৎস হিসেবে ভূমিকা রাখে।
  • খনিজ পদার্থ দৈহিক পুষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের অন্যতম উপাদান হিসেবে কাজ করে। খেজুর দেহে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে এবং দাঁত ও হাড় মজবুত করে।
  • খেজুর লৌহ সমৃদ্ধ ফল হিসেব! ভূমিকা পালন করে। রক্তে লৌহিত কণিকার প্রধান উপাদানের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। কিন্তু খেজুর লৌহসমৃদ্ধ ফল বলে এই রক্তশূন্যতা দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
  • খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম বিদ্যমান যা আমাদের শরীরের নার্ভাস সিস্টেম কে সচল রাখার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
  • গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে খেজুরের মধ্যে প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে যা মানুষের ষ্ট্রোক হওয়ার ভয়াবহতাকে ৪০% কমিয়ে দেয়।

খেজুরে বিদ্যামান উপাদান ও খেজুরের উপকারিতা:

  • প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের মধ্যে ৩২৪ মিলি গ্রাম ক্যালরি থাকে। খেজুরে ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে তাই খেজুর শিশুদের জন্যও অনেক উপকারী একটি ফল।
  • খেজুরে রয়েছে ৭৭.৫% কার্বহাইড্রেট যা অন্যান্য খাদ্যের বিকল্প শক্তি হিসেবে কাজ করে।
  • ক্ষুধা নিবারণের বিকল্প খাদ্য হিসেবে আমরা ৫-৭ টি খেজুর খেয়ে এক গ্লাস পানি পান করতে পারি।
  • খেজুরে রয়েছে ৬৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৭.৩ মিলিগ্রাম লৌহ। এই ক্যালসিয়াম ও লৌহ হাড়, দাঁত, নখ, ত্বক, চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • আয়রণের পরিমাণও বেশি রয়েছে খেজুরে। তাই রক্তস্বল্পতা ও শরীরের ক্ষয়রোধ করতে খেজুরের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা!
  • সারাদিন রোজা রাখার পর পেট খালি থাকে বলে শরীরে শক্তির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। খেজুর সেটা দ্রুত পূরণে সাহায্য করে।
  • তুলনামূলকভাবে শক্ত খেজুরকে পানিতে ভিজিয়ে (সারা রাত) সেই পানি খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
  • পেটের মধ্যে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে খেজুর। এছাড়াও মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধেও এই ফল বেশ কার্যকরী।
  • মুখের লালাকে ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে খেজুর। ফলে বদহজম দূর হয়। হৃদরোগ কমাতেও খেজুর বেশ উপকারী।
  • উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাট সম্পন্ন খেজুর জ্বর, মূত্রথলির ইনফেকশন, যৌনরোগ, গনোরিয়া, কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী।
  • খেজুর নেশাগ্রস্তদের অঙ্গ ক্ষয় প্রতিরোধ করে। স্বাস্থ্য ভালো করতে বাড়িতে তৈরী ঘিয়ে ভাজা খেজুর ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে খেজুর।
  • ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দেয় খেজুর।
  • সুস্থ হৃদপিন্ডে দেহযন্ত্রে স্বাচ্ছন্দ এবং সতেজ বিধান করে এমন শক্তিদায়ক বা বলবর্ধক ঔষধ হিসেবে খেজুরের জুড়ি নেই।
  • যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী।
  • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর ব্লেন্ড করা জুস খেলে হার্টের সমস্যায় ভুক্ত ভোগী ব্যক্তিরা ভাল ফলাফল পাবেন।
  • খেজুরে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি থাকে বিধায় যারা একটু দূর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারী, সামান্য পরিশ্রমে হয়রান হয়ে যায় তাদের জন্য এটি একটি উৎকৃষ্ট পথ্য।
  • খেজুর হৃদরোগ, জ্বর ও পেটের ব্যথায় উপকারী এবং বল বর্ধক ঔষধ হিসেবে কাজ করে।

কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:

খেজুরের ইংরেজি কি?

ডেট।

খেজুরকে আরবিতে কি বলা হয়?

تواريخ

খোরমা খেজুরের উপকারিতা কি?

খোরমরা খেজুরে প্রচুর খনিজ ও শক্তি রয়েছে। এটি ভিজিয়ে খেলে পিপাসা দূর হয়।

খেজুর থেকে কি কি খাবার বানানো যায়?

হালুয়া বানানো যায়। ওষুধ তৈরিতে ও খাবারে ব্যবহার করা হয়।

খেজুর গাছের ফুল কেমন?

সাদা ও ঝাড়ুর মতো।

খেজুরের রস কখন পাওয়া যায়?

শীতকালে।

খেজুর পাতা দিয়ে কি হয়?

ঝাড়ু বানানো যায়, বিছানা তৈরি করা যায়।

Leave a Comment