প্রিয় পাঠক, সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই আমরা অনেক দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে আজকে সভ্য সমাজের দেখা পেয়েছি! এমন এক সময় ছিলো- যখন বেঁচে থাকাই ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ। যেমন পাথরের যুগ। আর আজ আমরা এই পাথরের যুগ কাকে বলে ও কি বোঝায় তা জেনে নিব।
সভ্যতা ছোয়া মানুষের জীবন ধারাকে পরিবর্তন করতে থাকে। মানুষ ধীরে ধীরে ধাতু, পাথর, আগুন সহ বিভিন্ন বস্তু ও উপাদানের ব্যবহার রপ্ত করতে থাকে।
ফলে মানুষের কাজ কর্ম সহজ হয়, ধীরে ধীরে চিন্তুা ও চাহিদায় পরিবর্তন ঘটতে থাকে। মানুষ জন্মগ্রহণ করেই একটি নির্দিষ্ট পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা ধর্মগােষ্ঠীর সদস্যে পরিণত হয়।
আর এ পরিবার পর্যায়ে পৌছাতে মানুষকে লাখ লাখ বছরের পথ ও যুগ অতিক্রম করে আসতে হয়েছে।
পাথরের যুগ কি ও কাকে বলে:
প্রাচীন কালের মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে যুগে যুগে বিভিন্ন সভ্যতা গড়ে তােলার প্রয়াস পেয়েছে।
এর মধ্যে; পাথরের যুগের সভ্যতা ছিল অন্যতম।
ক্রমবিকাশের ধারাবাহিকতায় মানুষকে সভ্যতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে প্রথমে বন্যদশা ও পরে বর্বরদশা অতিক্রম করতে হয়েছে।
খ্রিস্টের জন্মের পাঁচ হাজার বছর পূর্বে মানুষ প্রথম লিখন পদ্ধতি আয়ত্ত করতে পেরেছিল।
ফলে এ সময় থেকেই মানুষের সভ্যতার যুগ চিহ্নিত হয়েছে।
কিন্তু তাই বলে এর আগের ইতিহাস অন্বেষণও থেমে থাকেনি। আর লিখন পদ্ধতি উদ্ভাবনের পূর্বকালের সময় তাই প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলে পরিচিত।
প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে দুই থেকে তিন মিলিয়ন বছর আগের মানুষের জীবনাচরণ সম্পর্কে এক ধারণা লাভ করা যায়।
একেবারে বন্যদশা অতিক্রান্তের শেষ পর্বে এসে মানুষের প্রথম অগ্রগতির কালকে পাথর যুগ বলা হয়।
এর কারণ হলো এ সময় মানুষের শ্রম ও জীবনধারণের মুখ্য হাতিয়ার ছিল পাথর। তাই এটাকে বলা হয়েছে পাথরের যুগ ।
এ যুগের ইতিহাস পুনর্গঠন অত্যন্ত কষ্টসাধ্য বিষয়। তবে কিছু কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ যেমন- ফসিল, ব্যবহার্য দ্রব্যসামগ্রী, হাতিয়ার, গুহাচিত্র ইত্যাদি ছাড়া পাথরের যুগ সম্পর্কে জানার আর তেমন কোনো উৎস নেই।
তথাপি সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে ইতিহাস বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে অতীত আদিম মানুষের জীবন কেমন ছিল এবং কিভাবে তারা বর্বর সমাজ থেকে সভ্য সমাজের দিকে এগিয়ে গিয়েছে।
এ কারণে মানবসমাজের বিকাশে পাথর যুগের অবদান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
- আরো পড়ুন- মিশরের পিরামিড এর রহস্য
স্বাভাবিকভাবে পাথর যুগের মানুষের মূল ক্রিয়াকর্ম বলতে ছিল জীবিকার প্রয়ােজনে পাথর ভাঙা, পাথর কাটা, ঘষেমেজে ব্যবহারের উপযােগী করে তােলা।
এছাড়াও এ যুগের মানুষের বৃহত্তম দুটি অধ্যায় ছিল। প্রথমটি ছিল তাদের শিকারি জীবন আর দ্বিতীয়টি ছিল তাদের কৃষি জীবন।