খনার নাম আমরা সবাই শুনেছি। কে ছিলেন এই খনা? আজ খনার ১০টি বচন ও খনার পরিচয় নিয়ে আলোচনা করব।
চাকরির পরিক্ষাতে খনার বচন থেকে বা খনার বিষয়ে প্রশ্ন আসে। চলুন প্রথমে আমরা খনার পরিচয় জেনে নিই।
খনার পরিচয়:
খনা ছিলেন একজন গৃহবধু। ধারণা করা হয় ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে খনার বসবাস ছিলো পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার বারাসাতের দেউলি নামক গ্রামে।
কৃষিতে খনার বিশেষ দক্ষতা সহ গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যাতে তার বেশ জানাশোনা ছিলো।
খনার আসল নাম ছিলো লীলাবতী। ধারণা করা হয় তার জন্ম হয় শুভক্ষণে। এজন্য তাকে খনা নামে ডাকা হতো।
এছাড়াও অনেকের মতে খনাকে সিংহল রাজার কন্যা বলে মনে করা হয়।
খনার বিষয়ে সবচেয়ে দুঃখজন বিষয় হলো তার খ্যাতির প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে তার জিহ্বা কেটে দেওয়া হয়েছিলো।
তবে জিহ্বা কাটার আগে তিনি কিছু সময় প্রার্থনা করেন এবং সেই সময়ের মধ্যেই খনা তার বচন সমূহ বলে যান।
সেই বচনগুলোই লোক মুখে আজও প্রচলিত হয়ে আসা খনার বচন। চলুন খনার সেই বচনগুলো জেনে নেই।
খনার বিখ্যাত ১০টি বচন:
খনার বচনকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো:
১) কৃষিকাজ বিষয়ক বচন
২) জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক বচন
৩) আবহাওয়া বিষয়ক বচন
৪) ফসলের যত্ন বিষয়ক বচন
যাইহোক, খনার অনেক বচন রয়েছে। তবে খনার বিখ্যাত ১০টি বচন নিচে উল্লেখ করলাম।
- কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে ঠাস ঠাস।
- ব্যাঙ ডাকে ঘন ঘন,
শীঘ্র হতে বৃষ্টি জান। - কলা রুয়ে না কেটো পাত,
তাতেই কাপড়, তাতেই ভাত। - ষোল চাষে মূলা, তার অর্ধেকে তুলা, তার অর্ধেকে ধান, বিনা চাষে পান।
- শোল বোয়ালের পোনা, যার যারটা তার কাছে সোনা।
- চোরের ময়ের বড় গলা, লাফ দিয়ে খায় গাছের কলা।
- ফল খেয়ে জল খায়, যম বলে কাছে আয়।
- দক্ষিণ দুয়ারি ঘরের রাজা,
উত্তর দুয়ারি তাহার প্রজা,
পূর্ব দুুয়ারির খাজনা নাই,
পশ্চিম দুয়ারির মুখে ছাই। - নদীর জল ঘোলাও ভালো,
জাতের মেয়ে কালোও ভালো। - গরুর পিঠে তুললে হাত, গিরস্থে কভু পায়না ভাত, গাই দিয়া বায় হাল দুঃখ তার চিরকাল।
উপরের বচন ছাড়াও খনার আরো বচন রয়েছে। যেমন:
- দিন থাকতে বাঁধে আল,
তবে খায় তিন শাল,
বারো পুত তেরো নাতি,
তবে করো বোনো খেতি। - যদি বর্ষে মাঘের শেষ,
ধন্য রাজার পুণ্য দেশ। - গরু ছাগলের মুখে বিষ,
চারা না খায় রাখিস দিস।
কিছু প্রশ্ন-উত্তর:
মধ্যযুগের একজন কিংবদন্তী মহিলা ছিলেন খনা। খনা তার বচনের জন্য বিখ্যাত। তার বচন বর্তমানে খনার বচন নামে সর্বত্র পরিচিত।
শুদ্ধ জীবন-যাপন করার রীতি হলো খনার বচনের মূলভাব।
খনা তার বচনের জন্য বিখ্যাত। তার বচন খনার বচন নামে সবার কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয়।
উত্তর: খনার বেশির ভাগ বচন কৃষি বিষয়ে। কৃষি বিষয়ে মানুষকে জানানোর জন্য খনা অনেক উক্তি করে গেছেন।
যেমন: ষোল চাষে মুলা, তার অর্ধেকে তুলা, তার অর্ধেকে ধান, বিনা চাষে পান।