প্রিয় পাঠক, আজ আমরা আমাদের সবার পরিচিত একটি ফল আমলকি খাওয়ার উপকারিতা কি কি তা নিয়ে আলোচনা করবো।
আমলকি এক ধরনে ভেষজ ফল হিসেবেই আমাদের সবার কাছে পরিচিত। তবে আমলকির বহুবিধ গুণের কারণে আমলিক জগৎখ্যাত একটি ফল।
আমলকি পরিচিতি:
এই আমলকি আমাদের দেশে সকলের কাছে আমলকি হিসেবেই পরিচিত। তবে- আমলকিকে সংস্কৃত ভাষায় আমালিকা বলা হয়।
তবে আমলকি ইরেজিতে আমলা (Amla) নামে পরিচিত. আর আমলকির গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Phyllanthus emblica.
আমরা যদি আমলকির স্বাদের কথা বলি- তবে, পাকা আমলকি হোক বা কাঁচা আমলকি হোক; আমলকি টক স্বাদের হয়ে থাকে।
একটি মজার ব্যপার হলো আপনি যদি আমলকি চিবিয়ে পানি পান করেন- তবে আপনি মিষ্টি স্বাদ পাবেন! তাছাড়া- আমলকি খাওয়া শুরু করার পরেই এর টক বা কষ্টা স্বাদ আর থাকে না।
আমলকির মতো ভিটামিন সি আর কোনো ফলে নেই। ভিটামিন সি এর দিক থেকে আমলকির স্থান একদম সবার প্রথমে।
লেবু জাতীয় কোনো ফলে এতো ভিটামিন সি আর নেই। গবেষণা মতে লেবুর চেয়ে আমলকিতে ১০ গুণ বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।
আমলকি খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা কি কি তা জেনে নিনঃ
১। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি শরীলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন সি সর্দি কাশি দূর করে, ত্বক ভালো রাখে, সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
২। আমলকি হজমে বিশেষ উপকারি এবং পাকস্থলির অ্যাসিডিটির সমতা বজায় রাখে। আমলকি খাওয়ার কারণে লিভার ভালো থাকে।
৩। দূধের সাথে বা হালকা গরম জলে আমলকির গুড়ো মিশিয়ে সহজেই খাওয়া যায়। এতে করে ছেলেদের বিশেষ উপকার হয়। গোপন শক্তি বাড়ে।
৪। আমলকি ব্রেন ভালো করে। ব্রেনের কার্যকলাপে সাহায্য করে। ফলে মানসিক শক্তি বাড়ে।
৫। আমলকি খাওয়ার একটি বিশেষ উপকার হলো এটি রক্তের সুগার লেভেল ঠিক রাখে। এর সাথে সাথে আমলকি ডায়াবেটিকস প্রতিরোধোক হিসেবে কাজ করে।
৬। আমলকি কোলেস্টেরল এর মাত্রা ঠিক রাখে। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে কাজ করে।
৭। আমলকি খাওয়ার আরো একটি উপকারিতা হলো- এটি হার্ট এবং ফুসফুসকে ভালো রাখে এবং এমন কি ফুসফুস শক্তিশালী করে।
৮। আমলকি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীল ঠান্ডা থাকে। আমাদের দেহের পেশি আরো শক্তিশালী হয়।
৯। আমলকির তৈরি জুস খেলে চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ে, বদ হজম, পেটের জ্বালা ভাব দূর হয়।
১০। যাদের কোষ্টকাঠিন্য এবং পাইলস এর সমস্যা আছে, তারা রোজ আমলকি খেলে উপকার পাবেন।
আমলকি কিভাবে চুলে ও মাথায় ব্যবহার করলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যাবে ?
যাদের মাথায় চুল কম, চুল পরা বন্ধ হচ্ছে না, কিংবা তারাতাড়ি চুল পাকা রোধ করতে চান, তাদের জন্য আমলকি ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।
এজন্য আপনাকে কাঁচা আমলকি বেটে সরাসরি মাথায় লাগিয়ে রাখতে হবে।
এছাড়া, লাল জবা ফুল এবং আমলকি এক সাথে বেঁটে নিয়ে তা মাথায় এবং চুলে প্রায় ৩ ঘন্টা লাগিয়ে রাখতে হবে! এর পরে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এছাড়া কাঁচা আমলকি পিষে মাথায় মাখলে ঘুম ভালো হয়। পাশাপাশি মাথা ও চুলেরও উপকারিতা পাওয়া যায়।
আমলকি হাতের নাগালে না পেলে আমলকি থেকে তৈরি করা তেল ব্যবহার করতে পারেন।
সারা বছর আমলকি সংরক্ষণ করার উপায় কি ?
আমলকি সারা বছর ধরে সংরক্ষণ করে রাখা খুবই সহজ। রোদে ভালো করে শুকিয়ে আমলকি সংরক্ষণ করা যায়।
আমলকি গুড়ো করেও রাখা যায়! ওষধির দোকানে আমলকির চূর্ণ বা গুঁড়ো পাওয়া যায়।
এছাড়া আমলকি আচার বানিয়েও রাখা যায়। আচার বানিয়ে ঘরে রাখলে সারা বছর খাওয়া যাবে।
তবে আমলকির গুড়ো ওষধ হিসেবে বেশ কর্যকর। দূধের সাথে বা হালকা গরম জলে আমলকির গুড়ো মিশিয়ে সহজেই খাওয়া যায়।
আমলকি কেটে কেটে, পানিতে দিয়ে জ্বাল দিয়ে, সেই পানি ঝড়িয়ে ফেলে দিয়ে; সেই আমলকির সাথে লবণ, আদা ও লেবুর রস মাখিয়েও সংরক্ষণ করা যায়।
- আরো পড়ুন- কলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি ?
প্রিয় পাঠক, আমরা আমলকি খাওয়ার উপকারিতা কি কি তা জানলাম। আমাদের পেজে সকল ফলের উপকারিতা নিয়ে আরো তথ্য বহুল পোষ্ট রয়েছে! জ্ঞান অর্জনের জন্য সেগুলো জেনে রাখতে পারেন।
আমলকির ইংরেজি নাম আমলা।
আমলকি, হরতকি ও বহেরাকে একত্রে ত্রিফলা বলা হয়।
কাঁচা আমলকি পিষে চুলে ও মাথায় দিতে হয়।
ভিটামিন সি বেশি থাকে।