প্রাচীন লিপি গুলোর মধ্যে হায়ারোগ্লিফিক্স লিপি ছিলো অন্যতম। আজকে আমরা হায়ারোগ্লিফিক্স লিপি পরিচিতি ও বর্ণনা জেনে নিব।
প্রাচীন হায়ারোগ্লিফিক্স লিপির আবিষ্কার, শিক্ষা, জ্ঞান, বিজ্ঞান ও ব্যবসা বাণিজ্যর ক্ষেত্রে মানব সভ্যতাকে পৌঁছে দেয় উন্নতির উচ্চ শিখরে।
শুধু তাই নয়, ৪টি হায়ারোগ্লিফিক্স লিপি যোগ হয়ে ২৬টি ইংরেজি বর্ণমালা সম্পন্ন হয়েছিল।
হায়ারোগ্লিফিক্স লিপি আবিষ্কার, পরিচিতি ও বর্ণনা:
প্রাচীন ব্রোঞ্জ যুগের নগর সভ্যতার একটি যুগান্তকারী ঘটনা ছিল লিখন পদ্ধতির আবিষ্কার করা এবং লিপির আবিষ্কার করা।
বর্ণভিত্তিক চিত্রলিপির উদ্ভাবন মিশরীয় সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার ছিল। মিশরীয় লিখন পদ্ধতি কে হায়ারোগ্লিফিক্স লিখন পদ্ধতি বলা হতো যার অর্থ ছিল পবিত্র লিপি।
সুতরাং হায়ারোগ্লিফিক্স শব্দের অর্থ হল পবিত্র লিপি।
প্রাচীন রাজবংশের যুগে মনের ভাব প্রকাশের জন্য চূড়ান্তভাবে ২৪টি হায়ারোগ্লিফিক্স চিহ্ন বা বর্ণমালা ব্যবহার শুরু হয়।
প্রত্যেকটি চিহ্নকে মানুষের স্বরের একেকটি ব্যঞ্জনধ্বনি হিসেবে প্রকাশ করা হতো। ফলে প্রাচীনতম সময় থেকে হায়ারোগ্লিফিক্স লিখন পদ্ধতি তার চারিত্রিক বিন্যাসের দিক থেকে তিনটি রূপ লাভ করেছিল।
এগুলো হলো চিত্র ভিত্তিক লিপি, অক্ষর ভিত্তিক লিপি এবং বর্ণ ভিত্তিক লিপি।
প্রাচীন মিশরীয় ভাষার উপযোগী এবং তার সাথে খুবই সংগতিপূর্ণ ছিল এই হায়ারোগ্লিফিক্স লিপি। তবে হায়ারোগ্লিফিক লিপি সাধারণ কাজের উপযোগী ছিল না।
এ কারণে সাধারণ কাজের উপযোগী হিসেবে বাহুল্য বর্জিত ও টানা লেখার উপযোগী লিপি হিসেবে প্রথমে হায়ারেটিক এবং পরবর্তীতে ডেমোটিক লিপি আবিষ্কার করা হয়।
ডেমোটিক লিপি মিশরে খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক্স লিপি মিশর ছাড়াও, ক্রিট, প্যালেস্টাইন, ফিনিশিয়া, লিভিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
এ সকল অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা, বাণিজ্যিক হিসাব কাজ পরিচালনার জন্য এই লিপি গুলো ব্যবহার করত।
মিশরীয় লেখা অনুসারে ইংরেজি ভাষায় প্রায় ২২ টি বর্ণ উদ্ভাবন করা হয়েছিলো।
ফিনিশীয়রা, e, i, o u এই চারটি স্বরবর্ণ যোগ করে এবং গ্রিকরা পরবর্তীতে আধুনিক ইংরেজি বর্ণমালা ২৬ টি বর্ণ সম্পন্ন করেছিলো।
হায়রোগ্লিফিক্স ব্যঞ্জনধ্বনি দেখে, একে বর্ণমালা বলে ভুল করার কারণ নেই। কেননা ব্যঞ্জনধ্বনির প্রতীক গুলো ছিল অধিকাংশ প্রতীকধর্মী।
আবার ব্যঞ্জনধ্বনি বিভিন্ন প্রতীক এর সাহায্যে প্রকাশিত হয়েছে। ফলে হায়ারোগ্লিফিক্স লিপি কে বর্ণমালা রূপে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ ছিল না।
পরিশেষে বলা যায় হায়ারোগ্লিফিক্স লিপির আবিষ্কার, লিখন পদ্ধতির আধুনিক যুগের শুভ সূচনা ঘটাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।