প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার শাসন ব্যবস্থা কেমন ছিল বিস্তারিত জেনে নিন

পৃথিবীর যে কয়েকটি প্রাচীন সভ্যতা রয়েছে- তাদের মধ্যে মিশরীয় সভ্যতা অন্যতম। মিশরীয় সভ্যতার- শাসন ব্যবস্থা হলো অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ধারণা করা হয়, প্রায় ৫০০০ খ্রিষ্টপূর্ব অব্দের দিকে, নদী মাতৃক এই সভ্যতার সূচনা শুরু।

মিশরীয় সভ্যতা যেমন রহস্যে ঘেরা, তেমনি, মিশরী সভ্যতার শাসন ব্যবস্থাও অনেক বৈচিত্রময়।

আমরা এখন- প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার শাসন কাল, শাসক, শাসন পদ্ধতি সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেব।

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার শাসন ব্যবস্থা বিস্তারিত:

সাম্রাজ্যর যুগের সরকার পদ্ধতিতে জাতীয় ঐক্যের চেয়ে, ফারাওদের শাসনের ভিত্তি ছিল সামরিক শক্তি। তখনকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কথা জানা না গেলেও গোটা সাম্রাজ্যকে পঞ্চশোধিত প্রশাসনিক ভাগে ভাগ করে, ফারাও কর্তৃক গভর্নর নিয়োগ করা হতো।

প্রাচীন মিশরের শাসন ব্যবস্থা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত ছিলো। মিশরীয় প্রশাসন ব্যবস্থা- প্রাচীন রাজ বংশ, মধ্য রাজ বংশ এবং নয়া রাজ বংশ এই ৩ পর্যায়ে বিভক্ত করে আলোচনার করা যথাযথ হবে।

প্রাচীন রাজবংশের শাসন বলতে- ফারাওদের একচেটিয়া পুরোহিত তান্ত্রিক স্বৈরাচারী ও স্বর্গীয় শাসন ব্যবস্থা বোঝানে হয়।

এছাড়াও ফারাওরা ছিলেন প্রধান পুরোহিত এবং নিজেকে সূর্য দেবতা বা রে এর পুত্র বলে দাবি করতেন।

কাজেই ফারাউকে স্বর্গীয় শাসক বা দেবতা রাজা হিসেবে গণ্য করা হতো! মন্ত্রী অমাত্য বর্গ ফারাওকে তার শাসনকার্য পরিচালনায় সাহায্য করতেন।

এছাড়া প্রশাসনিক সুবিধার্থে মিশরকে ৪২টি নোম বা ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত করা হয়। এগুলোর ও দায়িত্ব দেওয়া হতো বিভিন্ন শাসকের উপর।

মধ্যযুগীয় যুগেও রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল এবং ফারাও সারা দেশ শাসন করতেন। তবে এসময় ফারাওদের ক্ষমতা কমে যায় এবং স্থানীয় রাজা ও অভিজাত শ্রেণী প্রভৃতি ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠেন।

নয়া রাজবংশের আমলেও ফারাওদের কর্তৃত্বাধীনে প্রশাসনযন্ত্র পরিচালিত হয়। তবে এসময় ফারাওদের ক্ষমতার মূল উৎস ছিল সামরিক শক্তি।

তবে এ সময়ে এসে শাসন ব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে এবং ধীরে ধীরে ফারাওদের কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা কমে যায়।

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় তখন, মিশরকে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ৪২টি নোমে বিভক্ত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেকটিতে একজন করে শাসনকর্তা বা ফেরাউন নিয়োগ করা হতো।

মানব সভ্যতার উৎকর্ষ সাধনে যাদের অবদান ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে এবং চিরকাল স্মরনীয় হয়ে থাকবে তাদের মধ্যে মিশরীয় সভ্যতা অন্যতম।

FAQ:

ফারাও বলা হতো কাদের কে ?

মিশরের প্রধান শাসকদের স্থানীয়ভাবে ফারাও বলা হতো। ফারাও নিজেকে সূর্য দেবতার পূত্র মনে করতেন। এমনকি নিজেকে ঈশ্বরও মনে করতেন।

মিশরকে শাসন করার জন্য কিভাবে ভাগ করা হয়েছিলো ?

প্রশাসনিক সুবিধার জন্য মিশরকে ৪২ টি নোম বা অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছিলো।

এক কথায় মিশরীয় সভ্যতার শাসন ব্যবস্থা কেমন ছিলো ?

মিশরীয় সভ্যতায় শ্রেনি বৈষম্যমূলক শাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান ছিলো। সেখানে দাস প্রথা ছিলো। রাজ-রাজারা অনেক উচ্চাভিলাসি আয়েসী জীবন-যাপন করতো।

Leave a Comment