কলোজিরা বহুল ব্যবহৃত এবং সহজলভ্য একটি মশলা অথবা ভেষজ। কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি তা আমাদের সকলেরই জেনে রাখা উচিত।
কালোজিরা আয়ুর্বেদীয়, ইউনানি বা কবিরাজি, চর্ম ও লোকজ চিকিৎসায় বহুবিধ রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে।
আমি নিজেও কালোজিরা খেয়ে উপকৃত হয়েছে। গরম ভাতের সাথে কালোজিরা তেল খেতে আমার অনেক ভালো লাগে।
তাছাড়াও কালোজিরা ভর্তা আমার প্রিয় একটি খাবার। অনেকেই কালোজিরার ভর্তা পছন্দ করেন।
তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কালোজিরা খাওয়ার ৫০ টি উপকারিতা কি কি তা জেনে নেওয়া যাক।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি
- প্রসব কালীন ব্যথা কমাতে, প্রসূতির স্তনে দুধ বৃদ্ধির জন্য প্রসবের পরে কালোজিরার ভর্তা খাওয়ার প্রমাণিত উপকারী বিধান আছে।
- প্রশ্বাবের পরিমান বাড়ানোর জন্য কালোজিরা খাওয়া হয়।
- মাথাব্যথা কমাতে, মাথা ঝিমঝিম করা, মাইগ্রেন নিরাময়ে কালোজিরা যথেষ্ট উপকারী।
- পেটফাঁফা নিরাময়ে কালোজিরা যথেষ্ট উপকারী।
- চামড়ার ফুসকুরি, ব্রঙ্কাইটিস, এলার্জি, একজিমা, এজমা আরোগ্য করে কালোজিরা।
- ডায়রিয়া নিরাময়ে কালোজিরা যথেষ্ট উপকারী।
- আমাশয় নিরাময়ে কালোজিরা উপকারী।
- গ্যাসট্রিক আলসার দূর করে কালোজিরা।
- জন্ডিস হলে কালোজিরা পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- খোসপাঁচড়া, ছুলি বা শ্বেতি হলে কালোজিরা খেতে হয়।
- অর্শরোগ আরোগ্য হয় কালোজিরা খাওয়ার ফলে।
- দাদে কালোজিরা অব্যর্থ ওষুধ হিসেবে ভূমিকা রাখে করে।
- স্নায়ুবিক উত্তেজনায় কালোজিরা ফলদায়ক।
- উরুসদ্ধি প্রদাহ কমে যায় কালোজিরা খাওয়ার ফলে।
- শরিলের আঁচিল দূর হয় কালোজিরা সেবনে।
- স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা নিয়মিত খেতে হয়।
- মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে এই কালোজিরা।
- শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য কারে এই কালোজিরা।
- স্ট্রোক, স্থুলতা রোধ করতে দারুণ কাজ করে কালোজিরা।
- গায়ের ব্যথা দূর করতে কালোজিরা বিশেষভাবে উপকার করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কালোজিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- বহুমূত্র বা ডায়াবেটিক্স রোগীদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিয়ে, ইনসুলিন সমন্বয় করে ডায়াবেটি্স নিয়ন্ত্রণ করে কালোজিরা।
- হার্টের বিভিন্ন সমস্যা, হাইপারটেনশন, নিম্ন রক্তচাপকে বাড়ায়; আর উচ্চ রক্তচাপকে কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে রক্তের স্বাভাবিকতা রক্ষা করে কালোজিরা।
- কালোজিরা কৃমি দূর করার জন্য অসাধারন কাজ করে।
- কালোজিরার তেলের উপকার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ত্বকের সুস্বাস্থ্য ও মাংসপেশির ব্যথা কমাতে কালোজিরার তেল উপযোগী।
- পেটের যাবতীয় রোগ-জীবাণু ও গ্যাস দূর করে থাকে কালোজিরা।
- কালোজিরা খাওয়ার ফলে দৈনন্দিন জীবনে দেহে বাড়তি শক্তি অজির্ত হয়।
- কালোজিরার তেল ব্যবহারে রাতের অনিদ্রা দূর হয় ও শান্তি মতো ঘুম হয়।
- ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিধন থেকে শুরু করে শরীরের কোষ ও কলার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে কালোজিরা।
এই কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা কি
- আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে যেসব সমস্যা হয় সেসবের যন্ত্রণাকর উপসর্গের তীব্রতা কমাতে পারে কালোজিরা।
- রিউমেটিক ফিভার হলে, কালোজিরা আমাদের পিঠের ব্যথা কমাতে কাজ করে।
- দেহের সাধারণ উন্নতি; চেহারার কমনীয়তা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে টনিকের মতো কাজ করে কালোজিরা।
- বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ ভালো হয় কালোজিরা খেলে।
- শিশুর দৈহিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ভালো থাকে কালোজিরা খাওয়ার কারনে।
- হজম সমস্যা দূরীকরণে, লিভারের সুরক্ষায়, দেহের সাধারণ উন্নতি; রুচি বাড়াতে সাহায্য করে কালোজিরা।
- ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, যকৃতের বিষক্রিয়া নাশক, প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে কালোজিরা।
- টিউমার এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে কালোজিরা।
- অবসন্নতা ও দুর্বলতা, নিষ্ক্রিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচিদূর করে কালোজিরা।
- দেহের কাটা-ছেড়া শুকানোর জন্য কাজ করে কালোজিরা। এছাড়াও শরীরের কোথাও ঘা, ফোঁড়া, ছোঁয়াচে রোগ হয় না কালোজিরা খেলে।
- কিডনির পাথর দূর করতে ও ব্লাডার সুরক্ষা দেয় কালোজিরা।
- তারুণ্য ও বয়স ধরে রাখতে মধ্যপ্রাচ্যে সহ বিভিন্ন দেশে কালোজিরা খাওয়া হয়ে থাকে।
- কাজ করার শক্তি কয়েকগুণ বেড়ে যায় নিয়মিত কালোজিরা খেলে।
- কালোজিরার তেলে রয়েছে খিদে বাড়ানোর বিশেষ উপাদান।
- পাকস্থলির জীবাণুকে নাশ করতে এবং শরীরের জমে থাকা গ্যাসকে দূর করতে কালোজিরার কোনো বিকল্প নেই।
- যারা মোটা হতে চান, তাদের জন্য কালোজিরা একটি ভালো পথ্য। অন্যদিকে; যারা চিকন হতে চান তারাও নিয়ম করে কালিজিরা খেলে কাজ হয়।
- বয়স বাড়লে হাত পা ফুলে যাওয়াটা একটা প্রধান সমস্যা। কালোজিরা খাওয়ার কারনে এ সমস্যা সমাধান হয়।
- কালোজিরা খাওয়ার কারনে শিশুদের মেধার বিকাশ হয়।
- কালোজিরাকে অ্যান্টিসেপটিক বলে অনেক ভেষজবিদ মনে করেন। দেহের কাটা-ছেড়া শুকানোর জন্য কালোজিরা ব্যবহার করা হয়।
- কালোজিরায় রয়েছে শরীরের রোগজীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান। এ উপাদানের জন্য শরীরে সহজে ঘা, ফোঁড়া, সংক্রামক রোগ হয় না।
- আরে পড়ুন-
কলোজিরা খেলে যবনের শক্তি বাড়ে কেনোঃ
রাসূল (সঃ) বলেন, “তোমরা এই কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র সাম (মৃত্যু) ব্যতীত সর্বরোগের শেফা (আরোগ্য) রয়েছে।” -বুখারী ও মুসলিম।
উক্ত হাদিস দ্বারা রোগ নিরাময়ে কালোজিরার সত্যতা প্রমাণিত হয়।
কালোজিরা খেলে যবনশক্তি বহূগুনে বেড়ে যায় কারন কালোজিরা স্নায়ুকে উজ্জীবিত করে ও দেহের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে।
যবনশক্তি বাড়াতে কালোজিরার উপাদান জাদুকরি ভূমিকা রাখে।
কারন কালোজিরাতে প্রায় ১০০ টিরও বেশি পুষ্টি ও উপকারী উপাদান আছে।
কালোজিরা ফুলের মধু উৎকৃষ্ট মধু হিসেবে বিশ্বব্যাপী বিবেচিত।
কালোজিরার প্রধান উপাদানের মধ্যে আমিষ রয়েছে ২১%, শর্করা রয়েছে ৩৮ %, স্নেহ ৩৫%।
এছাড়াও ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আছে।
প্রতি গ্রাম কালিজিরার পুষ্টি উপাদান হলোঃ প্রোটিন ২০৮ মাইক্রো গ্রাম, আয়রন রয়েছে ১০৫ মাইক্রো গ্রাম, ফসফরাস রয়েছে ৫.২৬ মিলি গ্রাম, কপার রয়েছে ১৮ মাইক্রো গ্রাম, জিংক আছে ৬০ মাইক্রো গ্রাম, ভিটামিন বি(১)রয়েছে ১৫ মাইক্রো গ্রাম, নিয়াসিন রয়েছে ৫৭ মাইক্রো গ্রাম, ক্যালসিয়াম রয়েছে ১.৮৫ মাইক্রো গ্রাম, ফোলাসিন আছে ৬১০ আইউ।
এই সমস্ত উপদান গুলো খুবই উপকারি ও আমাদের দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয়।
উক্ত উপাদন যবনশক্তি বাড়াতে খুবই সহায়ক।
তাই যবনশক্তি বাড়ানোর জন্য আমাদের নিয়মিত কালোজিরা খেতে হবে।
কালোজিরা খাওয়ার সাবধানতা :
- কালোজিরার তেল গর্ভাবস্থায় গ্রহণ করা ঝুকিপূর্ণ। গর্ভাবতী অবস্থায় অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে।
- অনেকেই কালোজিরা হজম করতে পারেনা। তবে আস্তে আস্তে অভ্যাস করলে ভালো।
- আবার যারা সহজে কালোজিরা হজম করতে পারেন না তারা খাবেন না, যারা পারেন তারাই নিয়মিত অল্প করে খাবেন।
- দুই বছরের কম বয়সের বাচ্চাদেরকে কালোজিরার তেল খাওয়ানো উচিত নয়।
- নকল অথবা কৃত্রিম কালোজিরার তেল খাওয়া ঠিক নয়। জেনে শুনে নিশ্চিত হয়ে কালোজিরা বা কালোজিরার তেল খেতে হবে।
- পুরনো কালোজিরার তেল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।